সৌদি আরবে প্রবাসীরা পাসপোর্ট ডিপোজিট কিভাবে খরচ করবে?

পাসপোর্ট ডিপোজিট সৌদি আরবে অবস্থানরত প্রবাসীদের নিকট অতি পরিচিত শব্দ নয়। কম বেশ সকল প্রবাসীগন আবশের নামক সিস্টেমের সাথে পরিচিত। এই আবশের একাউন্টে  My Passport অফশানে Passport Deposit নামে একটি অফশান আছে। পাসপোর্ট ডিপোজিট অফশানে রিয়াল জমা থাকে। আবার কারো পাসপোর্ট ডিপোজিটে রিয়াল জমা থাকেনা। আসুন বিস্তারিত জেনে নেই সৌদি আরবে প্রবাসীরা পাসপোর্ট ডিপোজিট কিভাবে খরচ করবেন, কোথায় খরচ করবেন, পাসপোর্ট ডিপোজিটের রিয়াল রিফান্ড করা যাবে কিনা।

পাসপোর্ট ডিপোজিট কি? What is Passport Deposit?

পাসপোর্ট ডিপোজিট সৌদি আরবের কোনো কর্মস্থানে ভর্তির সময় নেয়া একটি অর্থ, যা প্রবাসীর পাসপোর্টের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়। এই ডিপোজিট বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়, বিশেষত সরকারি খরচ, জরিমানা, বা প্রয়োজনীয় জরুরি অবস্থায়। সাধারণত এই অর্থ ব্যবহার করতে প্রতিষ্ঠান বা স্পন্সরের বা কফিলের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তবে সবার পাসপোর্ট ডিপোজিট থাকেনা।

পাসপোর্ট ডিপোজিট চেক করার নিয়ম :

পাসপোর্ট ডিপোজিট চেক করার জন্য আপনি আবশির  Absher লগইন করে চেক করতে পারবেন। আপনি চাইলে আবশির এপ্স ব্যবহার করে পাসপোর্ট ডিপোজিট কত রিয়াল আছে দেখতে পারবেন। আবশির এপ্সে লগইন করার পর আপনার ছবিতে ক্লিক করলে নিচের ছবির মত ইন্টারফেস দেখবেন।

পাসপোর্ট ডিপোজিট
পাসপোর্ট ডিপোজিট

My Passport এ ক্লিক করলে আপনার পাসপোর্টের যাবতীয় তথ্য দেখতে পারবেন। সবার উপরে আপনার পাসপোর্টে কত রিয়াল জমা আছে অর্থাৎ পাসপোর্ট ডিপোজিট দেখতে পারবেন। পাশাপাশি আপনার পাসপোর্টের কত তারিখে মেয়াদ শেষ হবে সেটাও দেখতে পারবেন।

প্রবাসে থেকেই প্রিয়জনকে উন্নত মানের ও আরামদায়ক পাঞ্জাবী , জিন্সপ্যান্ট, টি শার্ট, পলো টি শার্ট উপহার দিন। Touch Attire আপনাকে দিচ্ছে সাশ্রয়ী মূল্যে গুনগত মানসম্পন্ন কাপড় কেনার নিশ্চয়তা।

পাসপোর্ট ডিপোজিট কেন করা হয়?

সৌদি আরবে অনেক প্রবাসী কর্মী কাজের সুযোগ পাওয়ার আগে বা কাজের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পাসপোর্ট ডিপোজিট করতে হয়। এই ডিপোজিট মূলত একটি নিরাপত্তা জামানত, যা কর্মক্ষেত্রে ভ্রমণ অনুমোদন, ইকামা নবায়ন, জরিমানা পরিশোধ এবং প্রয়োজনে অন্যত্র খরচ করা যেতে পারে। তবে, ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নিয়ম এবং প্রক্রিয়া রয়েছে। সাধারণত কফিল পাসপোর্ট ডিপোজিট করে থাকেন।

সৌদি আরবে পাসপোর্ট ডিপোজিট খরচের বিভিন্ন উপায়

১. ইকামা নবায়ন

সৌদি আরবে কাজের জন্য ইকামা নবায়ন অত্যন্ত জরুরি। প্রবাসীদের ইকামা নবায়নের জন্য পাসপোর্ট ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহার করা যায়। ইকামা নবায়নের সময় নির্দিষ্ট ফি পরিশোধের জন্য ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহার করলে, এটি প্রবাসীর জন্য আর্থিকভাবে সুবিধাজনক হতে পারে।

২. জরিমানা পরিশোধ

কোনো কারণে প্রবাসীদের ওপর জরিমানা আরোপ হলে তারা তাদের ডিপোজিট থেকে অর্থ তুলে জরিমানা পরিশোধ করতে পারেন। এতে সময়মতো জরিমানা পরিশোধ সম্ভব হয় এবং আইনগত সমস্যার সম্মুখীন হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

৩. প্রয়োজনীয় সরকারি খরচ

সৌদি আরবে বিভিন্ন সরকারি কাজে খরচ করতে হয়। প্রবাসীদের ইকামা, হেলথ ইন্স্যুরেন্স, বা অন্যান্য জরুরি কাজের খরচ মেটাতে ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহার করা যেতে পারে। স্পন্সরের অনুমোদন নিয়ে সরকারি খরচে ডিপোজিট ব্যবহার করা যেতে পারে, যা প্রবাসীর জন্য বেশ উপকারী।

৪. ভিসা নবায়ন বা পরিবর্তনের খরচ

প্রবাসী যদি ভিসা নবায়ন করতে চান বা কর্মস্থল পরিবর্তন করতে চান তবে ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহার করা যেতে পারে। নতুন ভিসা ফি, ভ্রমণ খরচ এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ পরিশোধের জন্য এই অর্থ ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫. স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ

প্রবাসীদের প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ডিপোজিটের অর্থ ব্যয় করতে পারে। অনেক সময় প্রবাসীরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হন। ডিপোজিট থেকে এই খরচ বহন করতে পারে এবং এটি বিশেষত জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক।

পাসপোর্ট ডিপোজিট খরচ করার নিয়ম

ডিপোজিটের অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম এবং শর্ত রয়েছে যা মেনে চলা প্রয়োজন:

1. স্পন্সরের অনুমোদন: অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রবাসীদের স্পন্সর বা কর্মস্থলের অনুমোদন নিয়ে এই অর্থ খরচ করতে হয়।

2. Absher বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ: সৌদি আরবে Absher অ্যাকাউন্ট বা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ডিপোজিটের অর্থ বিভিন্ন কাজে পরিশোধ করা সম্ভব।

3. ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য: ডিপোজিট শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট এবং প্রয়োজনীয় খরচের জন্য ব্যবহৃত হবে।

 

কিভাবে পাসপোর্ট ডিপোজিটের অর্থ ফেরত পাবেন?

প্রবাসীরা কাজ শেষ করার পরে তাদের পাসপোর্ট ডিপোজিট ফেরত পাওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারেন:

স্পন্সরের কাছে আবেদন: কাজ শেষে স্পন্সরের কাছে আবেদন করতে হবে।

ডকুমেন্ট প্রদান: প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট, যেমন ইকামা বা চুক্তি, প্রদান করতে হবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফেরত: ডিপোজিট ফেরত দেয়া হলে এটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হতে পারে।

মনে রাখা বিশেষ প্রয়োজন যেই একাউন্ট থেকে পাসপোর্ট ডিপোজিট করা হয়েছে সেই একাউন্ট  এর মালিক পাসপোর্ট ডিপোজিট এর অর্থ ফেরত পাবার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

সতর্কতা ও পরামর্শ

সৌদি আরবে প্রবাসীদের ডিপোজিট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:

নিয়মিত ডিপোজিট চেক করা: প্রবাসীদের তাদের ডিপোজিটের অবস্থা নিয়মিতভাবে চেক করা উচিত।

অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়ানো: ডিপোজিট শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় খরচের জন্য ব্যবহার করা উচিত।

উপসংহার

সৌদি আরবে প্রবাসীরা তাদের পাসপোর্ট ডিপোজিটের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করে বিভিন্ন খরচ মেটাতে পারেন। ইকামা নবায়ন, জরিমানা পরিশোধ, এবং জরুরি খরচ মেটাতে এই অর্থ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রবাসীরা আর্থিক সুবিধা লাভ করতে পারেন। স্পন্সরের অনুমতি এবং সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে ডিপোজিট খরচ করলে এটি প্রবাসীদের জন্য আর্থিক সহায়ক হয়ে দাঁড়ায়।

সৌদি আরব থেকে নিজ দেশে ছুটিতে যাওয়ার সময় একজন কর্মী কোম্পানি বা কফিল থেকে কি কি সুযোগ সুবিধা পাবেন।

প্রবাসী হেল্প ডট কমে আপনার প্রবাস সংক্রান্ত যেকোন প্রশ্ন করুন কমেন্ট সেকশানে। আপনার প্রবাস জীবন সুন্দর হোক।

 

2 thoughts on “সৌদি আরবে প্রবাসীরা পাসপোর্ট ডিপোজিট কিভাবে খরচ করবে?”

  1. আমার পাসপোর্ট ডিপোজিট ২০০০ রিয়াল। আমি জমা করিনি। তাহলে কে এই রিয়াল জমা করেছে?

    Reply

Leave a Comment

error: Content is protected !!